বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ১০:১৩ অপরাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রীর বাসভবনের গেটে লাথি মারার ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ।
তিনি বলেন, এত বড় বড় কাহিনী ধরতে পারেন, অথচ এই ঘটনায় কোনো অ্যাকশন নিতে পারেন না? যারা হামলা চালিয়েছে তারা কারা?
মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে কালীবাড়ি রোডের সেরনিয়াবাত ভবনে বীর মুক্তিযোদ্ধা সাহান আরা বেগম ট্রাস্টের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে মেয়র এসব কথা বলেন। এর আগে প্রতিমন্ত্রীর বাসভবনে হামলার ঘটনায় গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের সূত্র ধরে মহানগর আওয়ামী লীগের বক্তব্য তুলে ধরেন প্রচার সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়া।
এ সময় মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ বলেন, আমরা শান্তিপ্রিয় মানুষ। আমরা বরিশালকে শান্তিতে রাখতে চাই। এতদিন শান্তিতে রেখেছি, সামনেও ইনশাল্লাহ রাখবো। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ থাকবে যারা এই ধরনের কর্মকাণ্ড করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। অন্যথায় আমরা বাধ্য হবো এই ধরনের কর্মকাণ্ড প্রতিহত করার। কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, কারা উপস্থিত ছিল তা আমাদের বলার প্রয়োজন নেই। ভিডিও ফুটেজ আছে। তাদের গ্রেফতার করেন না কেন?
তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকারের একজন মন্ত্রীর বাসার গেটে যারা লাথি মেরেছেন, যারা সেখানে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছেন তারাতো দলের কেউ না। তারা শিক্ষক মারধরকারী। এরা অবৈধভাবে কাজ বাগিয়ে নিতে চায়, অবৈধভাবে লাভবান হতে চায়। অথচ স্থানীয় সংবাদপত্রে খবর বেড়িয়েছে হামলাকারীরা ছাত্রলীগ-যুবলীগ। কিন্তু মহানগর ছাত্রলীগের কমিটি নেই। যুবলীগের সম্মেলনের প্রস্তুতি নেওয়া ছিল। কিন্তু চেয়ারম্যান করোনার কারণে বরিশাল আসতে না পারায় সম্মেলন হয়নি। আওয়ামী লীগের কেউ যদি হতো তাহলে আমাদের জিজ্ঞেস করতেন। কিন্তু সেসব না করে বলে দেওয়া হলো ছাত্রলীগ-যুবলীগ।
হামলাকারীদের ভিডিও দেখিয়ে মেয়র বলেন, এসব নোংরামি এখানে চলবে না। প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন জিরো টলারেন্স নীতি। সেটা সবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। আমার ভাইও যদি হয়, অপরাধী তো অপরাধীই। সে কোনো দলের হতে পারে না। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।
বীর মুক্তিযোদ্ধা সাহান আরা বেগম ট্রাস্টের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মেয়র জানান, নিজের সম্মানির প্রায় ২৫ লাখ টাকা দিয়ে ১৫০টি অক্সিজেন সিলিন্ডার কিনে করোনা আক্রান্ত রোগীদের সেবায় ট্রাস্টের যাত্রা শুরু করা হয়েছে।
তিনি বলেন, সিটি করপোরেশনে দায়িত্ব নেওয়ার পর আমি কোনো সম্মানি গ্রহণ করিনি। প্রথম এক বছরের বেশি সময়কালের সম্মানি করোনাকালে মানুষদের সহায়তায় ফান্ড তৈরিতে দিয়েছে। এরপরের যত সম্মানি পেয়েছি তা একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে রাখতে হয়েছে। আর সেই সম্মানির টাকা দিয়েই এই দেড়শ অক্সিজেন সিলিন্ডার ক্রয় করেছি।
মেয়র বলেন, ট্রাস্টের কাজ হবে বিপদে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো। করোনা রোগীদের জন্য ফোন দিলেই বাড়ি বাড়ি গিয়ে এই অক্সিজেন পৌঁছে দেওয়া হবে। ০১৭২২২৮৬৩৬৭, ০১৭২৩০২২৯৯৭ এবং ০১৭২৩৯৫০২১৮ এই তিনটি নম্বরে কল করার জন্য অনুরোধ করেন তিনি। শুধু অক্সিজেনের জন্য নয়, অ্যাম্বুলেন্সের জন্যও উল্লেখিত নম্বরে কল দিতে বলেন মেয়র।
মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ বলেন, আমরা যে মানুষ সেই বিষয়টি প্রমাণ করার সময় এখন। সরকারের দিকে তাকিয়ে থাকলে হবে না। সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে এগিয়ে আসতে হবে।
ট্রাস্টের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ ফারুখ হোসেন, বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট এ কে এম জাহাঙ্গীর হোসেন, বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র গাজী নইমুল হোসেন লিটু, রফিকুল ইসলাম খোকন প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার (১৩ আগস্ট) রাত ৮টার দিকে নগরীর নবগ্রাম রোডে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী ও বরিশাল সদর আসনের সংসদ সদস্য জাহিদ ফারুকের বাসা বেগম ভিলার সামনে তার অনুসারী দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। গেটের সামনে দাঁড়িয়ে ধূমপান করতে নিষেধ করা নিয়ে দ্বন্দ্বে এ ঘটনা ঘটে। এতে এক যুবলীগ কর্মী আহত হন। যদিও ঘটনার চারদিন পরও থানায় কোনো অভিযোগ দায়ের করেনি কেউ।
Leave a Reply